রুহি- তুই আমার ক্ষতি করলি এতো বড়। তোর কোনোদিন ভালো হবে না। তুই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় জিনিস কেড়ে নিয়ে এখন আমাকে ইগনোর করছিস?
আরাভ- নো বেবি ইটস এ গেম। তুমি ফেঁসেছো নিজেই।
রুহি- আমি ফাঁসি নি। তুই এনেছিস। এখন আমার সবটা নিয়ে তুই আমাকে ছেড়ে দিলি? কেনো কি দোষ করছি আমি তোর?
আরাভ- শুনো বাবু। আমি কিছু করি নি। তুমিই বলতা ভালোবাসি। তাই চেয়েছিলাম তোমাকে এক রাতের জন্য আর তুমি এলেও। এখন আর আমার ইন্টারেস্ট নাই তোমার প্রতি বললাম ই তো।
রুহি- আগেই বুঝা উচিত ছিলো মেয়ে তোর কাছে গেম। ২ নাম্বার ছিলাম না তোর ইউজ করে ছুঁড়ে ফেলা।
আরাভ- অবশ্যই। আর দুই নাম্বার না ৩ নাম্বার। তোমার আগেও আরও ছিলো গো।
রুহি- ছি ছি ছি আমার ঘৃণা হচ্ছে নিজের প্রতি। তোর কখনো ভালো হবে না দেখে নিস।
আরাভ- ওকে বেবি। টাটা।
এতক্ষণ কথা হচ্ছিলো আরাভ আর রুহির মাঝে। রুহি আরাভের বর্তমান প্রেমিকা। এটা বললে অবশ্য ভুল হবে, রুহি আরাভের প্রাক্তন প্রেমিকা। যার সাথে আরাভ খারাপ কাজ করে ছেড়ে দিলো। বড়লোক বাবার ছেলে আরাভ। যা চায় পেয়ে যেত। কিন্তু বাবা মায়ের কাছে সময় কম পেয়েছে সে। আরাভের বাবা মায়ের ডিভোর্স হয়ে যায় আরাভ যখন ৩য় শ্রেণীতে পড়তো তখন। তারপর থেকে তার বাবার কাছে থাকতে হয় তাকে। বাবা ভালোবাসতো কিন্তু ওতো সময় দিতো না। মায়ের কমতি থেকে নাকি খারাপ সঙ্গ এভাবে করে আরাভ খারাপ পথে পা বাড়ায়। যার একটি উদাহরণ সামনে।
গল্পের নায়িকা আনহা। সবসময় ফাজলামিতে মগ্ন থাকা একটা মেয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। আরাভ আর আনহা পুরাই আলাদা দুনিয়ার দুজন মানুষ।
কিছু মাস পর,,,,
কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলাম আমি (আনহা) আর মিমি। দুজনেই বেস্ট ফ্রেন্ড।
মিমি- ওই আনহা
আমি- কইতে থাক বকবকানি পেত্নি।
মিমি- তোরে না কইছি আমাকে এই নামে ডাকবি না।
আমি- এ্যা তুই কইলেই হলো। এই নামটা সেই মানায় তোরে।
মিমি- তোরেই মানায় এসব নাম।
আমি- লা লা লা। আমি তো ভালো মাইয়া।
মিমি- তুই একটা শয়তান্নি।
আমি- নাহি বেবি আমি একটা পেত্নি আর তুই বান্দরনি।
মিমি- দূরর। বাদ দে শুন কাল তো তোর জন্মদিন। কাল ট্রিট দিবি না?
আমি- হিহি কথায় না পাইরা। যাই বলো মনু ওকে, কাল যাবো নে। বাকীদেরও বলিস।
মিমি- আমি আর আসবই না। এই গেলাম আমি।
আমি- যাই কাল আমু নে ওকে।
এই বলে মিমি ঠিকই অটো নিয়ে চলে গেলো। আমি হাসতে লাগলাম। কিন্তু কে জানতো সামনে বিপদ আছে আমার।
সেদিন বাড়ি ফেরার পথে কেউ একজন চোখ বেঁধে আমাকে তুলে এনেছে। এখনো বুঝছি না কি হচ্ছে। মনে হলো কেউ এসে আমার পাশে বসলো।
একজন- সো অবশেষে ইউ আর হেয়ার
আমি- কে আপনি আর আপনি আমাকে এখানে আনলেন কেনো?
একজন- জানবে তো জানু সব জানবে।
আমি- মানে কি? এসব কি বলছেন? আর আমাকেই এখানে আনলেন কেনো?
একজন- জন্মদিনের গিফ্ট নিবা না বেবি?
আমি- কে আপনি আর এভাবে কথা বলছেন কেনো?
একজন- তুমি আমাকে ভালো করে না হলেও কিছুটা তো চিনোই।
আমি- প্লিজ আমাকে যেতে দিন আমি কি ক্ষতি করছি আপনার?
একজন- না বেবি আজ তো তুমি আমার এক রাতের আনন্দ দেওয়া বস্তু।
আমি- মানে?
একজন- এতো ডিটেইলে বলা লাগে? ওকে শুনো আজ রাতে আমি তোমাকে ……. করবো।
আমি- প্লিজ আমার ক্ষতি করিয়েন না। আমার উপর আমার স্বামী ছাড়া আর কারো অধিকার নেই।
একজন- তাহলে আজকের জন্য তুমি আমার এক রাতের বউ।
আমি- না দয়া করে ছেড়ে দিন আমাকে। আমি মুখ দেখাতে পারবো না কাউকে।
একজন- তাই তো বলছি ভালোয় ভালোয় আমাকে সব দিয়ে দেও।
আমি- অসম্ভব আমি কখনো দিবো না। ছাড়ুন আমাকে।
আমি জোড় করা শুরু করলাম। লোকটা আমার হাত ধরে ফেললো। আমি কেঁদে ফেললাম।
লোকটি- কেঁদে লাভ নাই জান আমি গলবো না। অনেক কথা হলো। এখন কাজে আসা যাক। আজ রাতটা তুমি আর আমি আদিম খেলায় মেতে উঠবো।
আমি- প্লিজ।
লোকটি- নো প্লিজ বেবি কাছে আসো।
লোকটা আমাকে টান দিলো আমাকে বিছানা জাতীয় কোথাও ফেললো। আমার চোখ এখনো বাঁধা। লোকটা আমার আরো কাছে আসতে লাগলো। আমি তাকে ধাক্কা দিলাম। এতে প্রচন্ড রেগে গেলো লোকটি। আমার গালে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলো।
লোকটা- রাগ উঠাবি না। চুপচাপ থাক। তোকে তো আজ আমি নিজের করবোই।
আমি- দয়া করে ছেড়ে দেন। আমিও তো কারো বোন,একদিন কারো মা হবো।
লোকটা- হাহা। এসব কথায় যায় আসে না।
লোকটির লালসা আমার প্রতি আমি আটকাতে পারলাম না। লোকটা আমার হাত বেঁধে রেখেছিলো। তবুও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু পেরে উঠলাম না।
সব শেষে,
আমি- কেনো এরকম ক্ষতি করলেন আমার? কে আপনি?
লোকটি- অনেক জানার ইচ্ছা? এই দেখ।
চোখ থেকে কাপড় সরিয়ে নিতেই দেখলাম সামনে আরাভ। হুম আমি আরাভকে চিনি। না সে আমার প্রেমিক না। অন্যভাবে আমি চিনি তাকে। তা নাহয় সামনে জানবেন। গল্পে আসা যাক।
আমি- মি. আরাভ।
আরাভ- ইয়াহ বেবি আমি।
আমি- আমি আপনার বেবি না আর কেনো করলেন এমন? কি করেছি আমি আপনার? কেনো এমন?
লোকটি- কারণ তোকে আপন করার একটা ইচ্ছা ছিলো আমার। করে নিলাম।
আমি- বিয়ে করতেন আমাকে। এভাবে কেনো?
লোকটি- হা হা আমি কোনোদিন বিয়ে করবো না।
আমি- এরকম করলেন কেনো?
লোকটি- শুন তোর ভালো এতেই যে যা হইলো চুপ থাক। তোর ফোন দিয়ে তোর বাড়িতে মেসেজ দিছি তোর মা কে তুই গ্রুপ স্টাডি করছিস। সো চিন্তা নাই।
আমি- এটা ঠিক করলেন না। আমি তো কোনো ক্ষতি করি নি আপনার। কেনো এমন?
লোকটি- তুই রাগলেও কিউট রে।
আমি- চুপপপপ। আপনি কেনো করলেন?
লোকটি- চুপ কর তো একটু। দেখি তোকে। (আমার মুখে হাত রেখে)
আমার ঘৃণা হচ্ছিলো তার প্রতি। এরপর আরাভ আমাকে ঠিক করে বাড়ি পাঠিয়ে দিলো। কিন্তু আমার প্রচুর কান্না পাচ্ছিলো।
আরাভের সাথে আমার দেখা হঠাৎ করে হয়ে যায়। একদিন এক কনসার্টে বান্ধুবিদের জোর করায় আমি গিয়েছিলাম। সেখানে সেও ছিলো। চুপচাপ এক কোণে ছিলো। আমি ভাবলাম হয়তো মন খারাপ। আমার সবাইকে হাসাতে ভালো লাগে তাই এগিয়ে গেলাম।
আমি- মন খারাপ?
আরাভ তাকালো না।
আমি- আপনাকেই বলছি কালো শার্টওয়ালা গোমরা মুখো ভাইয়া।
আরাভ- আমাকে বলছেন?
আমি- না এখানে তো একটা ভুত আছে আমি তার সাথে কথা বলছি।
আরাভ- মানে?
আমি- মন খারাপ?
আরাভ- না।
আমি- তো আলুর মতো মুখ করে আছেন কেনো?
আরাভ- আপনি পাগল?
আমি- আরে না আমি তো মেয়ে পাগলি হবো।
আরাভ- সে যাই হোক এখানে আমাকে বলছেন কেনো?
আমি- একটা গল্প বলে যাচ্ছি।
আরাভ- ওকে বলুন বলে ফুটেন।
আমি- একদিন আমি যাচ্ছি।
আরাভ- ওহ।
আমি- আরে শুনেন। আমি যাচ্ছি মিমির সাথে। মিমি জিগায় “আনহা তুই প্রেম করিস না কেনো?” আমি কি বলছি জানেন?
আরাভ- না।
আমি- আরে আমি প্রেম করি না কারণ আমি নিয়মিত সাবধান ইন্ডিয়া দেখি। ওইটা দেইখা ভয় লাগে।
আরাভ- ওহ।
আমি- একটু হাসেন।
আরাভ- হাসি পায় নি।
আমি- দূরররর আমি কি এখন আপনাকে হাসাতে বান্দর ডান্স করবো। হাসুননননন।
আরাভ- আজব তো।
আমি- আপনি পঁচা। আই হেট্টু।
আরাভ- (জবাব দিলো না)
আমি- ওই হাওয়াই মিঠাই আসুন।
আমি একটা হাওয়াই মিঠাই নিয়ে খেতে লাগলাম।
আমি- খাবেন? ইয়াম্মি।
আরাভ- না।
আমি- এই দেখেন আমার দাড়ি হইছে হিহি।
আরাভ- (অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকালো। বাচ্চার মতো ব্যবহার আর এরকম পাগলামি মার্কা অবস্থা দেখে আরাভ নিজেই হাসে দিলো)
আমি- ইয়াহু আমি হাসাতে পারছি। যাই গা থাকুন।
এই বলে চলে গেলাম আমি।
একটি মন্তব্য করতে প্রবেশ বা নিবন্ধন করতে হবে।