মানুষের গায়ের রং যে কারণে সাদা কিংবা কালো হয় জেনে নিন কুরআনের ব্যাখ্যা

পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষের মধ্যে কেউ কালো, কেউ সাদা, কেউ বা শ্যমল বর্ণের হয়ে থাকে। কিন্তু কেন? যদি সব মানুষের গায়ের রং এক হতো তাহলে কেউ কাউকে নিশ্চয় অপছন্দ করতো না্। কিংবা নিজে ফর্সা বলেও কেউ অহংকার করতো না। তাই অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে মানুষের গায়ের রং ঠিক কি কারণে আলাদা বর্ণের হয়েছে। বিজ্ঞান এর নানা রকম বর্ণনা দিয়েছে। তবে অনেকের আগ্রহ কুরআন ও হাদিস এ প্রসঙ্গে কী বলেছে।মানুষের গায়ের রং যে কারণে সাদা কিংবা কালো হয়

এ প্রসঙ্গে কুরআন ও হাদিসের বেশ কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়। আবু মুসা আশয়ারী রা. থেকে একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। রাসুল সা. বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা আদমকে এক মুঠো মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এই মাটি তিনি জমিনের সব জায়গা থেকে নিয়েছেন, যার কারণে আদম সন্তান হয়েছে জমিনের প্রকৃতির মতো, কেউ লাল, কেউ কালো, কেউ সাদা ও কেউ হলুদ এমন নানা বর্ণের । এভাবে কেউ হয়েছে নরম স্বভাবের, কেউ হয়েছে কঠিন, কেউ ভালো, আবার কেউবা খারাপ।’ (তিরমিযি, ইবনে হিব্বান)

এই হাদিস পড়লেই স্পষ্ট হয়, মানুষের একেক রকম বর্ণ ও একেক রকম স্বভাব আল্লাহর একান্ত সৃষ্টি ও মানুষের তাকদির অনুসারে হয়েছে। মানুষ হয়েছে তার উপাদানের ধরণ অনুযায়ী। যে কালো মাটি

থেকে সৃষ্ট তিনি কালো বর্ণের। যে সাদা বা লাল মাটি থেকে তৈরি তিনি সাদা বা লাল হয়ে থাকেন। আর এ বিষয়টি সবারই জানা, পৃথিবীর সব জায়গার মাটি এক বর্ণের নয়। আফ্রিকার মাটি আর যুক্তরাষ্ট্রের মাটির মধ্যে রাত দিন তফাৎ। যে কারণে তাদের চেহারাও আমরা পুরোপুরি ভিন্ন দেখতে পাই।

আবার মাটির স্বভাবও বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। কোথাও কাদা মাটি কোথাও বা পাথরের মতো শক্ত। সেই মাটি অনুযায়ী মানুষের স্বভাবও হয়ে থাকে তেমনই নরম ও কঠিন। এগুলো আল্লাহর কুদরত ও মহান ক্ষমতার নির্দশন। তিনি চান সকল মানুষ তার ক্ষমতার অধীনে থাকুক। তিনি তার প্রজ্ঞা অনুসারে যেভাবে ইচ্ছা সৃষ্টি করতে পারেন। কেননা, তিনি যা চান, যেভাবে চান করতে পারেন।


মানুষের গায়ের রং যে কারণে সাদা কিংবা কালো হয়

পবিত্র কুরআনে বর্ণের এ ভিন্নতা নিয়ে আল্লাহ বেশ কিছু আয়াত নাজিল করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, বর্ণের এ ভিন্নতায় জ্ঞানীদের মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। সত্যিই এটি নিয়ে কেউ চিন্তা করলেই বেশ কিছু বিষয় খুব সহজেই ধরা পড়ে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য। (সুরা রুম, আয়াত ২২)

আল্লামা শানকিতি রহ. বলেন, ‘একাধিক জায়গায় আল্লাহ তায়ালা পরিষ্কার ঘোষণা করেছেন, মানুষের রং ও বর্ণের পার্থক্য অথবা তার অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যে তারতম্য আল্লাহর সৃষ্টিক্ষমতার বহির্প্রকাশ। এসব বস্তুর বিভিন্ন রং ও বর্ণ তার মহান সৃষ্টি ও নিখুঁত পরিকল্পনার ফসল।’ (আদওয়াউল বায়ান ৬/১৭৩)

মানুষ ইচ্ছে করলেই গবেষণার মাধ্যমে বের করতে পারবে মানব রং-এর এ তারতম্য বিষয়ে। আর মানুষের হেকমত তো হলো তার ¯্রষ্টার সৃষ্টিকে মেনে নেয়া। কেননা তিনিই উত্তম বিধানদাতা।

সুরা আল ইমরানের ৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তিনি তোমার প্রতি যে গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন, তার মধ্যে আছে বিধান-সংবলিত আয়াত; এগুলোই কিতাবের মূল। আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ’ (যা প্রচ্ছন্ন)। যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, তারা ফেতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে ‘মুতাশাবিহ’ আয়াতসমূহের পেছনে লেগে থাকে, অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে গভীরতা রাখে, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে। আর বুদ্ধিমানেরই উপদেশ গ্রহণ করে।’

মন্তব্য করুন »

একটি মন্তব্য করতে প্রবেশ বা নিবন্ধন করতে হবে।

 

এই সম্পরকিত আরও »
০৫, ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ১:০৬ পূর্বাহ্ণ - বিবিসি ফ্লাই
৩০, ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ - M S Emon Ahmed Juktibadi
লেখক সম্পর্কে »

সম্পাদক ও প্রকাশক: আরিফুল ইসলাম । ফোনঃ ০১৮৭৪৪০৬৯৭৭, ফ্যাক্সঃ ৯৯৩০৪৮৬, ১০১২/১ জামতলা মোড়, শরপাড়া, কাফরুল, ঢাকা-১২১৬,বাংলাদেশ ই-মেইলঃ [email protected]

জনপ্রিয় পোস্ট »
০৮, জুলাই, ২০১৯, ২:১০ অপরাহ্ণ - বিবিসি ফ্লাই
১৬, অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০৪ পূর্বাহ্ণ - মেসিলা ইয়াসমিন
২৫, জুলাই, ২০১৯, ৬:২৩ অপরাহ্ণ - লতিফা বেগম
২৭, নভেম্বর, ২০১৯, ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ - ডাক্তার ফাহামিদা সাবিনা
সাম্প্রতিক লেখাসমূহ »
২২, আগস্ট, ২০২১, ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ - Aysha
১৪, আগস্ট, ২০২১, ৭:৫৮ অপরাহ্ণ - Aysha Biswas
২৩, জুলাই, ২০২১, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ - Akhi Akber
২৩, জুলাই, ২০২১, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ - Sidratul Momotha Rim