নারীদের বেশিরভাগ সময় কাটে রান্নাঘরে বিভিন্ন কিছু রান্না করে; যা অনেক সময়ের ব্যাপার। দিন শেষে ভীষণ ক্লান্তি আঁকড়ে ধরে। নিজের জন্য একটু সময় বের করা যায় না। আর যারা কর্মজীবী নারী তাদের তো কথাই নেই। রান্নাঘরের বিভিন্ন কাজ স্মার্টভাবে করে ফেলার পদ্ধতি জেনে নিন।
রান্না ঘরের সকল কাজ করার কিছু টিপস:
পুরো সপ্তাহের বাজার একবারে করে স্টক করুন। মাছ, মাংস প্রয়োজন মতো দুই-একদিন পর পর কিনুন।
অগোছালো কিচেনে অহেতুক সময় নষ্ট হয়। যে জিনিসগুলো প্রতিদিনের রান্নায় লাগে, যেমন তেল, লবণ, চিনি, মশলাপাতি ইত্যাদি আলাদা আলাদা স্বচ্ছ কৌটায় ভরে লেবেল করে হাতের কাছেই গুছিয়ে রাখুন।
সমস্ত রান্না হয়ে গেলে তার পর কিচেন পরিষ্কার করব—এই মানসিকতা মোটেই ভালো নয়। ক্লান্ত শরীরে অনেক সময়ই কিচেন পরিষ্কার করতে ইচ্ছে করে না। তাই রান্না যখন শেষের দিকে, তখনই কিচেন গোছাতে আরম্ভ করে দিন।
এক কাজের সাথে অন্য কাজ মিশিয়ে করলে অনেক সময় বাঁচে। যেমন—মাংস বা এমন কিছু সেদ্ধ হওয়ার সময় আপনি অন্য কিছু কাজ সেরে ফেলতে পারেন।
আগের দিন কোনো কাজ একটু বেশি করে রাখলে পরের দিন আর করতে হয় না। যেমন—সবজি কাটার সময় একটু বেশি করে কেটে ফ্রিজে রাখুন। বেশি পরিমাণে জল কিংবা আলু সেদ্ধ করে রাখুন।
যখনই কিছু রান্না করবেন, অবশ্যই ঢাকনা চাপিয়ে রান্না করুন। এতে গ্যাস যেমন বাঁচবে, তেমই তাড়াতাড়ি রান্না হবে।
বিকেলের নাস্তার জন্য সকালের ময়দা, আটা মেখে রাখুন। তাহলে আর বাড়তি সময় লাগবে না।
তেল, ঘি কিংবা আচার, যেখানে রাখবেন সেখানে প্লাস্টিক বা গ্রিজপ্রুফ পেপার সিট বিছিয়ে নিন। তাহলে প্রত্যেকবার তেল ঘি মুছতে সময় নষ্ট হবে না।
চা, চিনি, ডাল নানারকম মশলা-পাতি টান্সপারেন্ট জার অথবা লেবেল দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। তাহলে খুঁজতে সময় নষ্ট হবে না।
হাতের কাছে একটা কাঁচি রাখুন। প্যাকেট খোলার দরকার ছাড়াও ধনেপাতা, কারিপাতা চট করে কেটে নেওয়া যাবে।
যখন ডিম সিদ্ধ করবেন তখন তার সাথে কিছু আলু সিদ্ধ করে নিন। পরে তরকারিতে ব্যবহার করতে পারবেন।
ছুটির দিনে পরোটা বানিয়ে আধা সেঁকা করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। সকালে নাশতার চিন্তা কমে যাবে।
পিঁয়াজ, রসুন, আদা ইত্যাদি কুচি করে এয়ার টাইট বাক্সে ফ্রিজে রেখে দিন। মশলা পিষতে ব্লেন্ডার ব্যবহারের অভ্যাস করুন।
রোজ রোজ সবজি রাঁধতে ইচ্ছা না করলে বা সময় না হলে কাঁচা সালাদ খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে যেমন শরীরের উপকার, তেমনি সময়ও বাঁচে।
খাবার অতিরিক্ত হলে তা ফেলে দেবেন না। পরের দিনের রান্নায় এটি ব্যবহার করতে পারেন। যেমন বেঁচে যাওয়া মাংসের টুকরোগুলো দিয়ে পরের দিন বাচ্চাদের টিফিনের জন্য চিকেন নুডলস বানিয়ে ফেলাই যায়, দেয়া যায় স্যান্ডুইচে। অথবা মেয়েনিজ মাখিয়ে সাধারণ আটার রুটির মাঝে দিয়ে সাথে দিন শসা, টমেটো। একটু সস ছিটিয়ে রোল করে দিন। অনায়াসে তৈরি টিফিন।
সব সময় ডিপ ফ্রিজে একটু রান্না করা মাংস মজুদ রাখবেন। যেদিন একান্তই রাঁধতে ইচ্ছা হবে না, সেদিন বের করে নিলেন। গরু বা খাসির মাংস অনেকদিন ডিপে থাকে।
বাড়ির সকলকেই অভ্যাস করান নিজের প্লেট নিজে ধুয়ে রাখতে।
সহজে ও চটপট করে নিন কিছু কাজ:
ডিম সিদ্ধ করার সময় পানিত একটু লবণ মিশিয়ে নিন। তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হবে।
রসুনের খোসা ছাড়ানোর সময় ঈষদুষ্ণ পানিতে ডুবিয়ে নিন। সহজে ছাড়াতে পারবেন।
গাজর প্রথমে কিছুক্ষণ গরম পানিতে ডুবিয়ে রেখে তারপর খোসা ছাড়ান। সহজ হবে।
ফ্রিজে কিছু হিমায়িত নাশতা যেমন সিঙ্গারা, সমুচা, রোল ইত্যাদি রাখুন। ব্যস্ত জীবনে মেহমানদারিতে কাজে দেবে।
ডিমের সাদা অংশ চটপট ফোটাতে হলে একটু লবণ মিশিয়ে নিন।
গরম পানিতে ডাল সেদ্ধর সময় একটু তেল দিয়ে নিন। এতে ডাল উতলে যাবে না। ফলে ওই সময়ে আপনি অন্য কাজ করতে পারবেন।
একটি মন্তব্য করতে প্রবেশ বা নিবন্ধন করতে হবে।