ছোট্ট এই দোয়াটি ৭০ বার পড়লেই রিযিকের সব দরজা খুলে যাবে ইনশাআল্লাহ

পবিত্র কুরআন শরীফ মানব জাতির জীবন পরিচালনার গাইড। মহান আল্লাহ তাআলা মানুষ এবং জিন জাতিকে পৃথিবীতে তাঁর ইবাদাত-বন্দেগি করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। এ জীবন পরিচালনার জন্য তিনি গাইডস্বরূপ কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন।

কুরআনের মানুষের সব সমাধান রয়েছে। কুরআনের বিধান পালনের সঙ্গে সঙ্গে কুরআনি আমল করাও মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ইবাদাত কবুলের পূর্বশর্তই হলো হালাল জীবিকা উপার্জন করা। তাই হালাল রিযিক লাভের কুরআনি আমল তুলে ধরা হলো-

উচ্চারণ: আল্লাহু লাতিফুম্ বি-ই’বাদিহি ইয়ারযুকু মাইঁয়্যাশায়ু, ওয়া হুয়াল কাওইয়্যুল আজিজ।

অর্থ: আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা রিযিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। (সুরা শুরা : আয়াত ১৯)

আমল: প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে, একনিষ্ঠতার সঙ্গে ৭০ বার এ আয়াত পড়া। যে বা যারা নিয়মিত এ আমল করবে; আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির রিযিকের দরজা খুলে দেবে ইনশাআল্লাহ।

ছোট্ট এই দোয়াটি ৭০ বার পড়লেই রিযিকের সব দরজা খুলে যাবে ইনশাআল্লাহ

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর বিধি-বিধান পালনের সঙ্গে সঙ্গে কুরআনের উল্লেখিত আয়াতে আমলটি নিয়মিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

রিযিক বৃদ্ধির ছয়টি উপায়

রিযিকের ভেতর অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত। যেমন- স্বাস্থ্য, সম্পদ, খাদ্য, বুদ্ধি, উপায়-উপকরণ, সময় ইত্যাদি। এমনকি আমাদের জীবনটাও রিযিক। এই সবকিছু আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন। মুসলিম হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি যে আল্লাহ হলেন আর-রাযযাক্ব তথা রিযিকদাতা। আমাদের যা কিছু আছে সবই আল্লাহর দান। প্রত্যেকেই চায় তার রিযিক বৃদ্ধি পাক। কিন্তু একেকজনের নিয়ত থাকে একেকরকম।

কেউ হয়তো পার্থিব ও বস্তুগত ভোগের আশা করে। এই প্রবন্ধটি তাদের জন্য নয়। এখানে রিযিক বৃদ্ধির ছয়টি আধ্যাত্মিক কারণ উল্লেখ করা হয়েছে যা ইবাদাতের সাথে সম্পর্কিত। সঠিক নিয়তধারী দ্বীনদার ব্যক্তিই কেবল এটি থেকে উপকৃত হবেন।

মুমিন হিসেবে আমরা আমাদের নিয়ত থাকবে অধিক রিযিক অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা, পরিবারের দেখাশোনা করা, অপরকে সাহায্য করা এবং জান্নাত অর্জন করা। স্বার্থান্ধতা থেকে আমাদের মুক্ত থাকতে হবে। যদি আপনার নিয়ত এমনটাই হয়, তাহলে কোরআন ও সুন্নাহ থেকে আহরিত এই ছয়টি উপায় আপনার জন্য পরিবেশিত হলো:

ছোট্ট এই দোয়াটি ৭০ বার পড়লেই রিযিকের সব দরজা খুলে যাবে ইনশাআল্লাহ

১। তাক্বওয়া

যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। [সূরা তালাক(৬৫): ২-৩]

এটি আমার সবচেয়ে প্রিয় আয়াতগুলোর একটি। জীবনে বহুবার আমি মুত্তাক্বী ব্যক্তিদেরকে ধারণাতীর উৎস থেকে রিযিক পেতে দেখেছি। এটা আল্লাহর ওয়াদা এবং আল্লাহর ওয়াদা অবশ্যই সত্য। আমাদের উচিত রিযিকের ব্যাপারে তাক্বওয়া অবলম্বন করা এবং বিপদ ও পরীক্ষার মুহূর্তে তাক্বওয়ার উপর অবিচল থাকা। তাক্বওয়াই সাফল্যের চাবিকাঠি।

২। তাওয়াক্কুল

“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।“ [সূরা তালাক(৬৫): ৩]

উপরের আয়াতটির বাকি অংশ আমাদের আলোচনায় সেভাবে স্থান পায় না। প্রথম অংশ তাক্বওয়ার কথা বলে, দ্বিতীয় অংশ তাওয়াক্কুলের। তাওয়াক্কুল করার অর্থ হলো, আপনার যা প্রাপ্য তা আল্লাহ আপনাকে দেবেনই সেই দৃঢ় বিশ্বাস অন্তরে ধারণ করে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাওয়া। কঠিনতম মুহূর্তেও আল্লাহর সাহায্যের উপর আস্থা রাখা। রিযিকের তালা খোলার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার এই তাওয়াক্কুল।

৩। দান-সদকা

কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেবে, ফলে তিনি তার জন্য বহু গুণে বাড়িয়ে দেবেন? [সূরা বাক্বারাহ(২): ২৪৫]

রিযিক বাড়ে কিনা এই পরীক্ষা করার জন্য দান-সদকা করা ঠিক নয়। আমরা দান-সদকা করবো গরীব ও অভাবীদের সাহায্য করার নিয়তে। নিয়তের বিশুদ্ধতা ও দানের মানের ভিত্তিতে সাওয়াব দশ থেকে বহুগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। যেসব দ্বীনদার মুসলিম প্রচুর রিযিক লাভ করেন, তাঁদের বৈশিষ্ট্য হলো দানশীলতা। তাক্বওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বনের পাশাপাশি যাঁরা দান-সদকা করেন, তাঁদের রিযিকের পরিমাণ হয় কল্পনাতীত।

৪। কৃতজ্ঞতা

আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন’। [সূরা ইবরাহিম(১৪): ৭]

রিযিক বৃদ্ধি করার চতুর্থ উপায় হলো, আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তা যত কমই মনে হোক না কেন, তার ব্যাপারে কৃতজ্ঞ হওয়া। সাধারণ নিয়ম হলো, শুকরিয়া আদায় করলে বৃদ্ধি পায় আর অভিযোগ করলে হ্রাস পায়। আল্লাহ আপনাকে যা যা দিয়েছেন তার দিকে তাকান আর প্রতিটা জিনিসের জন্য কৃতজ্ঞ হোন। কৃতজ্ঞতাকে আপনার জীবনের অংশ বানিয়ে নিন।

৫। ইস্তিগফার

“অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।“ [সূরা নূহ(৭১): ১০-১২]

এ অংশটি নেওয়া হয়েছে কওমের প্রতি নূহ (আলাইহিসসালাম) এর উপদেশ থেকে। তিনি তাদের তাওবাহ ইস্তিগফার করতে বলেছেন যাতে তাদের রিযিক বৃদ্ধি পায়। আয়াতগুলোতে বৃষ্টি, ধনসম্পদ, সন্তান, উদ্যান ও নদীকে রিযিক বলা হয়েছে। আমরা প্রতিদিনই গুনাহ করি। তাই প্রত্যহ অজস্রবার আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া উচিত। ইস্তিগফারের ফলে রিযিকে বারাকাহ আসে।

৬। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করা

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে কামনা করে যে তার রিযিক বৃদ্ধি পাক এবং জীবন দীর্ঘায়িত হোক, সে যেন আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে।“ [সহীহ বুখারী]

সর্বশেষ ধাপ হলো পারিবারিক বন্ধন রক্ষা করা। একজন মুসলিম কখনো পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন করে যে যার পথে চলে যেতে পারে না। পারিবারিক বন্ধন রক্ষায় সচেষ্ট হলে আল্লাহ আমাদের রিযিক ও হায়াতে বারাকাহ দিয়ে দেবেন।

শেষ কথা:

মনে রাখবেন যে, দুনিয়া হলো আসল গন্তব্যে পৌঁছানোর মাধ্যম মাত্র। আল্লাহর সন্তুষ্টিই আসল কথা। রিযিক বেশি পেয়ে কোনো লাভ হবে না যদি তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য খরচ না করা হয়। স্মরণ রাখতে হবে যে, অধিক রিযিকের সাথে আসে অধিক জবাবদিহিতা। আমরা আমাদের জান-মাল কোন পথে ব্যয় করেছি, তার জন্য আখিরাতে আল্লাহর নিকট হিসাব দিতে হবে।

মন্তব্য করুন »

একটি মন্তব্য করতে প্রবেশ বা নিবন্ধন করতে হবে।

 

এই সম্পরকিত আরও »
৩০, ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ - M S Emon Ahmed Juktibadi
০৪, নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ - বিবিসি ফ্লাই
লেখক সম্পর্কে »
জনপ্রিয় পোস্ট »
০৮, জুলাই, ২০১৯, ২:১০ অপরাহ্ণ - বিবিসি ফ্লাই
১৬, অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০৪ পূর্বাহ্ণ - মেসিলা ইয়াসমিন
২৫, জুলাই, ২০১৯, ৬:২৩ অপরাহ্ণ - লতিফা বেগম
২৭, নভেম্বর, ২০১৯, ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ - ডাক্তার ফাহামিদা সাবিনা
সাম্প্রতিক লেখাসমূহ »
২২, আগস্ট, ২০২১, ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ - Aysha
১৪, আগস্ট, ২০২১, ৭:৫৮ অপরাহ্ণ - Aysha Biswas
২৩, জুলাই, ২০২১, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ - Akhi Akber
২৩, জুলাই, ২০২১, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ - Sidratul Momotha Rim