কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কি কি খাবেন? আজকের প্রতিবেদনে তাই বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো।
ð আমাদের মধ্যে অনেকেই, শরীরের বিভিন্ন ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে নানান ফার্মেসিতে ছুটে বেড়াই। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি এসব রাসায়নিক বিকল্প, শরীরের সাময়িক উপশমেই উপযোগী। এই সব ভিটামিন, বা রোগ প্রতিরোধক ঔষধ, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খেলে শরীরে দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব পরতে পারে। তাই সবার আগে এই সব রাসায়নিক বিকল্প থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
ð তবে যেই সুসম খাদ্য অভ্যাসের প্রতি নির্ভর করে, আমারা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি-
I. মধু – সেই তালিকায়, মধু সবার শীর্ষে। প্রতিদিন যদি এক চা চামচ মধু এক বেলা সেবন করা যায়, তাহলে ১০০ রকম রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আর এটি দ্বারা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ৯১% বৃদ্ধি পায়।
II. কালোজিরা - এর কথা পবিত্র কোরআনেও বর্ণিত রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ৩দিন বা সম্ভব হলে প্রতিদিন যদি কালো জিরা ভর্তা খাওয়া যায় তাহলে সর্দি, কাশি এবং অন্যান্য ফ্লু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
III. সবুজ শাক-সব্জি ও রাসায়নিক মুক্ত ফলও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। সবুজ শাক-সব্জি; শরীরের ভিটামিনের চাহিদা মেটাবে আর ফল শরীরের জরুরি মিনারেল’স এর ঘাটতি মেটাবে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
IV. নিম- আমাদের সকলের কাছেই এই ভেষজ উপাদানটি বেশ সুপরিচিত। আমরা অনেকেই ছোট বেলায় দাদি-নানির কাছে, এটির মহিমার কথা শুনেছি। যদিও খুব একটা ভাল স্বাদ না হওয়ায়, এর থেকে দূরেও ছুটেছি অনেকবার, কিন্তু আপনারা কি জানেন, এই ঔষধী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম! শুধু তাই নয়, নিম কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবেই ভাইরাসকে শরীর থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।
V. অমৃতাভ্যাল্লি- এটি আর একটি ঔষধী ভেষজ যার সন্ধান মেলে পাশের দেশ ভারতে। যদিও দেশের কিছু ডিপার্টমেনটাল স্টোরে এটি পাওয়া যেতে পারে। এর ইংরেজি নাম (Heart Leafed Moon Seed) এবং বাংলা নাম গুলাঞ্চা। এটির মূল বিশেষসত্ত হলো, এটি সপ্তাহে একবার সেবনে, যেকোনো প্রকার ভাইরাস মোকাবেলা করতে শরীরকে প্রস্তুত রাখে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও দৃর ভূমিকা পালন করে।
VI. তুলসী- এটিও একটি অতি পরিচিত ভেষজ, যা বাংলাদেশে প্রায় সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। তুলসী শরীরকে সকল রোগের সাথে লড়তে সহায়তা করে।
VII. অ্যালভেরা- একটি বিদেশী ভেষজ, যা আজ কাল দেশের প্রায় সবর্ত্রই পাওয়া যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, এর ভূমিকাও অপরিসীম।
VIII. লেবু- সর্দি, কাশি মোকাবেলায় লেবুর গুন অশেষ। চীনের গবেষণার জরিপে উঠে এসেছে। প্রতিদিন এক কাপ গরম পানির সাথে এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে খেলে, শরীরের ভিটামিন সি’ র চাহিদা মেটে এবং এই ঘরোয়া টোটকা ৬০% পরযন্ত করনা মোকাবেলায় শরীরকে উপযোগি করতে সক্ষম।
IX. গ্রিন টি এবং ব্লু টি – আমাদের মধ্যে যারা স্বাস্হ্য সচেতন, তাদের কাছে গ্রিন টি খুব পরিচিত। আমারা জানি এটি মূল কাজ হল শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক বের করে দেয়া, এবং সেই রুপ শরীরের মেটাবলিসম বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। অনেকে ভাবছেন ভ্লু টির কি কাজ। ব্লু টিও ঠিক গ্রিন টির মতই উপকারী, অনেক ক্ষেত্রে গ্রিন টির চাইতে বেশী উল্লেকযোগ্য। ব্লু টি গ্রিন টির চাইতে ৫০% ভাগ বেশী কাযর্করী। কিন্তু গ্রিন টি, ব্লু টির তুলনায় বেশী সহজ লব্য হয়ায়, এটি চাহিদার শীর্ষে।
উপরে উল্লেকিত সকল উপাদান প্রাকৃতিক ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে উপযুক্ত। অধিকাংশই রক্ত পরিশোধন এবং ক্ষতিকর টক্সিক দূর করে শরীরকে ভাইরাস মোকাবেলায় সাহায্য করে। তবুও যদি কারোর উপরে উল্লেকিত উপাদানে কোন রকম অ্যালারজি থাকে, তাহলে সেটি বর্জন করাই উত্তম।
যদিও শুধু মাত্র খাদ্য-অভ্যাসে পরিবর্তন আনলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরোপুরি বৃদ্ধি করতে দৈনন্দিন অভ্যাসেও আনতে হবে পরিবর্তন।
ð রাত জাগা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম গুরুত্তপূর্ণ।
ð নিয়মিত দৈহিক বেয়াম শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করে, তাই বেয়ামের বিকল্প মেলা ভার।
ð বেশী বেশী তরল পান করতে হবে। যেমন ফলের রস, সুপ, পানি ইত্যাদি পান করতে হবে। এতে করে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে।
ð ধূমপান বা মাদক সেবন হতে বিরত থাকতে হবে।
ð পরিস্কার পরিচ্ছন্ থাকতে হবে।
আর এইভাবেই আমারা এই সময়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারি, এই মহামারী মোকাবেলায়। আসুন আমরা সবাই সামাজিক স্বাস্হ্যবিধি মেনে চলি, নিজেদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করি। আর আসুন আমরা সবাই এক হয়ে এই মহামারীকে রোধ করি।
নিজেরা সাভধানে থাকি, অন্যকে সাভধানে রাখি।
✓ ঘরে থাকুন ✓ সুস্থ থাকুন
একটি মন্তব্য করতে প্রবেশ বা নিবন্ধন করতে হবে।